Skip to main content

ফ্রয়েবেলের মতে উপহার(Gifts )এবং কাজ/বৃত্তি (Occupation) এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। (B.A.First Semester NEP Education Syllabus)

 ফ্রয়েবেলের মতে উপহার(Gifts )এবং কাজ/বৃত্তি (Occupation) এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। (B.A.First Semester NEP Education Syllabus)


ভুমিকাঃ-

       ফ্রয়েবেল তাঁর কিন্ডারগার্ডেন পদ্ধতিতে শিশুদের আত্মসক্রিতার নীতিকে পরিপূর্ণভাবে প্রয়োগ করেছেন। শুধু তাই নয়, শিশুরা যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে তার ব্যবস্থা এই পদ্ধতিতে রাখা হয়েছে। যার ফলে শিশুরা ক্রীড়া প্রবণতাকে সামনে রেখে জীবনের প্রয়োজনীয় সব কৌশল, দক্ষতা ও অভ্যাসগুলি অর্জন করতে পারে। শিশুর এই ক্রিয়া প্রবণতাকে কাজে লাগানোর জন্য ফ্রয়েবেল কতকগুলি শিক্ষামূলক উপকরণ ব্যবহার করেছেন। আর সেই উপকরণ গুলিকে কিন্ডার গার্ডেন পদ্ধতিতে বলা হয় উপহার(Gifts) এবং কাজ/বৃত্তি(Occupation)।

১) উপহার (Gifts):- 

         ফ্রয়েবেল উপহারের উপকরণগুলির মাধ্যমে জগতের নিয়মাবলীকে সাংকেতিকভাবে শিশুর কাছে পরিবেশন করতে চেয়েছেন। যার মধ্যে দিয়ে শিশুরা বাহ্য বস্তজগৎ সম্পর্কে বাস্তব ধারণা লাভ করে। সেই ধারণা লাভের জন্য তিনি ২০টি উপহারের কথা বলেন। তবে বর্তমানে কিন্ডারগার্ডেন বিদ্যালয়ে সাতটি উপহার ব্যবহার করা হয়।আর সেই ৭টি উপহার হল-

প্রথম উপহার -

     একটি বাক্সে ৬টি উলের বল রাখা হয়। যার মাধ্যমে রং, আকৃতি, গতি প্রভৃতি সম্পর্কে শিশু ধারণা পায়।

দ্বিতীয় উপহার-

          একটি বাক্সে গোলক, ঘনক এবং চোঙ থাকে। এই বস্তুগুলিকে নিয়ে শিশুরা খেলা করার সময় বিভিন্ন আকৃতির সম্পর্কে পরিচিত হয়।

তৃতীয় উপহারঃ

   একটি বড় ঘনককে কয়েকটি ছোট ছোট ঘনকে বিভক্ত করা হয়। যার ফলে শিশুরা সমগ্রের সাথে খন্ডের সম্পর্ক নির্ণয় করতে শেখে।

চতুর্থ উপহারঃ

       এখানে আটটি ছোট ঘনকের সমষ্টিতে একটি বড় ঘনক তৈরি করা হয়। সেখানে শিশুরা এই ধারণার মাধ্যমে বিভিন্ন আকারে বাড়ি তৈরি করতে শেখে।

পঞ্চম উপহারঃ

     এখানে ২৭টি টুকরো সম্পন্ন একটি ঘনক থাকে।যেগুলির সাহায্যে শিশুরা তৃতীয় ও চতুর্থ উপহারের সঙ্গে মিলিয়ে নানা আকৃতির জিনিস তৈরি করতে শেখে।

ষষ্ঠ উপহারঃ

       ষষ্ঠ উপহারটি বিশেষভাবে গণিত শিক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয়।

সপ্তম উপহারঃ 

   সপ্তম উপহারটি জ্যামিতি শিক্ষার জন্য বিশেষভাবে ব্যবহার করা হয়।


২) কাজ/বৃত্তি (Occupation)- 

      আমরা জানি খেলার মধ্যে শিশুরা যত আনন্দ পায় অন্য কোন ক্ষেত্রে সেই আনন্দ উপভোগ করতে পারে না। তাই কিন্ডারগার্ডেন পদ্ধতিতে শিশুদের খেলার সাথে কাজে সার্থক সমন্বয় করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কাজের ব্যবস্থা করা হয়। আর সেই কাজের ব্যবস্থা গুলি হল এইরূপ-

       কাগজের ফুল তৈরি করা, সেলাই করা, মাটির বিভিন্ন জিনিস তৈরি করা। এই ধরনের বিষয়গুলিকে নাম দেওয়া হয়েছে কাজ বা বৃত্তি।। সুতরাং এই বৃত্তি হল শিক্ষণ পদ্ধতি অন্যতম উপাদান বা উপকরণ। যা অনেক বেশী সৃজনশীল এবং শিশুদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করে।

         পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, ফ্রয়েবেলের শিক্ষণ পদ্ধতির মূল কথা হলো- শিশুর স্বতঃস্ফূর্ত সক্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষাকে আনন্দময় করে তোলা। আর সেই আনন্দের মধ্যে শিশুকে বিশ্বপ্রকৃতির রহস্য উপলব্ধি করতে সাহায্য করাই হলো উপহার এবং কাজ র মূল উদ্দেশ্য। তবে এই উদ্দেশ্য বা প্রচেষ্টা বিজ্ঞানসম্মত এবং আধুনিক শিক্ষাবিদরা স্বীকার করে নিয়েছেন ।


আরও বিস্তারিত বিষয়ভিত্তিক আলোচনা এবং সাজেশন পেতে ভিজিট করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল "SHESHER KOBITA SUNDORBON"।

Comments

Popular posts from this blog

জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course)

 জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course) ভুমিকাঃ আমরা জানি জ্ঞানের উৎপত্তি বা উৎস নিয়ে পাশ্চাত্য দর্শনে দুটি উল্লেখযোগ্য পরস্পর বিরোধী মতবাদ দেখা যায়। আর এই দুটি পরস্পর বিরোধী মতবাদের মধ্যে একটি অন্যতম মতবাদ হলো বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ। আর সেই বুদ্ধিবাদ অনুসারে-        আমরা জানি পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাসে বুদ্ধিবাদের প্রধান প্রবক্তা হলেন দার্শনিক ডেকার্ট। আর এই দার্শনিক ডেকার্টকে আধুনিক পাশ্চাত্য দর্শনের জনক বলা হয়। তবে তার পরবর্তী বুদ্ধিবাদী দার্শনিক হিসেবে স্পিনোজা, লাইবনিজ এবং কান্ট বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। সেখানে জ্ঞান উৎপত্তিতে-- ডেকার্ট এর অভিমতঃ            দার্শনিক ডেকার্ট এর মতে দর্শনচিন্তার প্রথম সূত্র হলো সংশয় বা সন্দেহ। আর এই সংশয় নিয়েই দর্শন আলোচনা শুরু হয় এবং সুশৃংখল সংশয়-পদ্ধতির মাধ্যমে সংসায়াতীত, স্বতঃপ্রমাণিত ও সার্বিক মূল সত্যে পৌঁছানো যাবে। এই মূল সত্য থেকে গাণিতিক অবরোহ পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে এবং তা অবশ্যই নির্মূল ও নির্ভরযোগ্য হবে। আর গণিতের অভ্রান্ততা এবং নিশ্চয়তাকে

ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা

 ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা করো। ব্যাপ্তি:- ন্যায় দর্শনমতে ব্যাপ্তি জ্ঞান হলো অনুমিতির অপরিহার্য শর্ত। ব্যাপ্তিজ্ঞান ব্যতীত অনুমিতির জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়। সুতরাং আমরা বলতে পারি, যেখানেই ধূম সেখানেই বহ্নি। এই সাহচর্য নিয়ম হলো ব্যাপ্তি।                 এখানে সাহচর্য কথাটির অর্থ হলো সমনাধিকরণ। অর্থাৎ যেখানে যেখানে ধূম থাকবে সেখানে সেখানে বহ্নি থাকবে। আর নিয়ম কথাটির অর্থ হলো নিয়ত বা ব্যতিক্রমহীনতা। সুতরাং সাহচর্য নিয়ম কথাটির মানে হল ব্যতিক্রমহীন সাহচর্য। আর সেখানে ধুম ও বহ্নির অর্থাৎ হেতু ও সাধ্যের সাহচর্য নিয়মই হল ব্যাপ্তি।    ব্যাপ্তি দুই প্রকার।         ১) সমব্যাপ্তি           ২) বিষমব্যাপ্তি। ১। সমব্যাপ্তিঃ               সমব্যাপক দুটি পদের ব্যাপ্তিকে সমব্যাপ্তি বলা হয়। এখানে ব্যাপক ও ব্যাপ্য-র বিস্তৃতি সমান হয়। যেমন, যার উৎপত্তি আছে, তার বিনাশ আছে। উৎপত্তি হওয়া বস্তু ও বিনাশ হওয়া বস্তুর বিস্তৃতি সমান। উৎপত্তিশীল ও বিনাশশীল সমব্যাপ্তি বিশিষ্ট। ২। বিষমব্যাপ্তি/অসমব্যাপ্তি :-             অসমব্যাপক দুটির প

তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস ছোট প্রশ্নোত্তর।

 ১) কুতুবউদ্দিন আইবক কে ছিলেন? উত্তর-কুতুবউদ্দিন আইবক গজনীর সুলতান মহম্মদ ঘুরির দাস ও সেনাপতি ছিলেন। তিনি দিল্লীর প্রথম তুর্কি সুলতান ছিলেন। তাঁর শাসনের শুরুর সাথে ভারতের এক নতুন যুগের সূচনা হয়। ২) নব্য মুসলমান কারা ছিলেন? কে তাদের দমন করেছিলেন? উত্তর - জালাল উদ্দিন ফিরোজ খিলজির আমলে হলান্ড বা আব্দুল্লা খানের নেতৃত্বে মোঘল আক্রমণ সংঘটিত হয় । তার আক্রমণ জালাল উদ্দিন কর্তৃক প্রতিহত হয় । সেই সময় কিছু বন্দি মঙ্গল জালাল উদ্দিনের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে । ধর্মান্তরিত হতে হবে এই শর্তে জালাল উদ্দিন তাদের আবেদনের সাড়া দেন। তারা এতে সম্মত হয় ।এই ধর্মান্তরিত মোঙ্গলেরা নব্য মুসলমান নামে পরিচিত। নব্য মুসলমানরা আলাউদ্দিনকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করলে সেই আলাউদ্দিন এর আদেশে একদিনে ৩০ হাজার নব্য মুসলমানকে হত্যা করে অর্থাৎ আলাউদ্দিন নব্য মুসলমানদের দমন করে। ৩) মালিক কাফুর দ্বারা বিজিত দাক্ষিণাত্যের দুটি রাজ্যের নাম করো। উত্তর - মালিক কাফুর ছিলেন সুলতান আলাউদ্দিনের একজন দক্ষ সেনাপতি । তাঁর দ্বারা দক্ষিণ ভারতের বিজিত রাজ্য দুটি হল দেবগিরি এবং বরঙ্গল। ৪) পাইবস ও সিজদা কি? উত্তর - পাইবস হল সম্রাটের প