Skip to main content

জানা' ক্রিয়াপদটি কী কী অর্থে ব্যবহার করা হয়? অর্থগুলি দৃষ্টান্তসহ বিশ্লেষণ করো।

'জানা' ক্রিয়াপদটি কী কী অর্থে ব্যবহার করা হয়? অর্থগুলি দৃষ্টান্তসহ বিশ্লেষণ করো।


ভূমিকাঃ 

         ইংরেজিতে Knowledge বা বাংলায় জ্ঞান বলতে আমরা বুঝে থাকি কোন বিষয় বা বস্তুকে জানা। কেননা Know এই ক্রিয়াপদ থেকে Knowledge শব্দটি এসেছে। তাই জানা ক্রিয়াপদটির অর্থ জেনে রাখা আমাদের অত্যন্ত জরুরি। আর এই জানা পদটি সাধারণত তিনটি অর্থে ব্যবহৃত হতে পারে। আর সেগুলি হল-

            ১) পরিচিতি অর্থে জানা ।

            ২) সামর্থ্য বা কর্মকৌশল অর্থে জানা।

            ৩) বাচনিক অর্থে জানা।

১) পরিচিতি অর্থে জানাঃ 

            যখন আমি বলি আমি রিচার্ড স্মিথ কে জানি, তখন এই কথাটির অর্থ হল রিচার্ডের সাথে আমার পরিচিতি আছে। অর্থাৎ দু একবার তাঁর সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল। এই সাক্ষাৎ পরিচয় না থাকলে কোন ব্যক্তি বা বস্তুকে জানি একথা বলা যায় না। বস্তু বা ঘটনার অস্তিত্ব সম্পর্কে এরূপ প্রাথমিক সচেতনতা থেকে যে জ্ঞান হয়, তাকে বলে পরিচিতমূলক জ্ঞান। সুতরাং 'জানা' বলতে এক্ষেত্রে বোঝায় সাক্ষাৎ পরিচিতি।

২) সামর্থ বা কর্মকৌশল অর্থে জানাঃ

          যখন আমি বলি, 'আমি ঘোড়ায় চড়তে জানি' তখন এই কথাটির অর্থ হল- ঘোড়ায় চড়বার সামর্থ্য বা কৌশল আমার জানা আছে। অর্থাৎ কীভাবে ঘোড়ায় চড়তে হয় সেই কলা কৌশল আমি জানি। বাস্তব ক্ষেত্রে যদি আমাকে ঘোড়ায় চড়তে বলা হয় এবং সত্য সত্যই আমি ঘোড়ায় চড়ে যেতে পারি তাহলেই আমি ঘোড়ায় চড়তে জানি কথাটির অর্থ বোধগম্য হবে।

৩) বাচনিক অর্থে জানাঃ 

         যখন কোন ব্যক্তি দাবি করেন যে, আমি জানি যে 'পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘোরে' তখন 'জানা' শব্দের অর্থ হলো- কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে বা কোন কর্মকুশলতাকে জানা নয়। এক্ষেত্রে জানা বলতে বোঝায়, একটি বচনকে জানা। 'পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘোরে' এটি একটি বচন। এবং 'আমি জানি' এটিও একটি বচন। এখন এই দুটি বচনকে একটি যৌগিক বচনে প্রকাশ করলে দাঁড়ায়, 'আমি জানি যে পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে'। আবার অন্যভাবে বলা যায়- 'পৃথিবীর যে সূর্যের চারদিকে ঘোরে এ বিষয়ে আমার জ্ঞান' আছে।

        পরিশেষে বলা যায় যে, দর্শনের জানা কথার অর্থ বাচনিক অর্থে জানা। পরিচিতিমূলক জ্ঞান, কর্মকৌশল জ্ঞান ও বাচনিক জ্ঞান এই তিন প্রকার জানা থেকে জ্ঞান উৎপন্ন হয়। আর এই তিন প্রকার জানার মধ্যে বাচনিক অর্থে জানা দর্শনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, পরিচিতি অর্থে জানা এবং কর্মকৌশল অর্থে জানা কোনো-না কোনোভাবে বাচনিক অর্থে জানার সাথে সম্পর্কযুক্ত।


(এইরকম আরও অসংখ্য বিষয়ভিত্তিক আলোচনা ভিডিও ও সাজেশন পেতে ভিজিট করুন SHESHER KOBITA SUNDORBON YOUTUBE CHANNEL)

Comments

Popular posts from this blog

জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course)

 জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course) ভুমিকাঃ আমরা জানি জ্ঞানের উৎপত্তি বা উৎস নিয়ে পাশ্চাত্য দর্শনে দুটি উল্লেখযোগ্য পরস্পর বিরোধী মতবাদ দেখা যায়। আর এই দুটি পরস্পর বিরোধী মতবাদের মধ্যে একটি অন্যতম মতবাদ হলো বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ। আর সেই বুদ্ধিবাদ অনুসারে-        আমরা জানি পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাসে বুদ্ধিবাদের প্রধান প্রবক্তা হলেন দার্শনিক ডেকার্ট। আর এই দার্শনিক ডেকার্টকে আধুনিক পাশ্চাত্য দর্শনের জনক বলা হয়। তবে তার পরবর্তী বুদ্ধিবাদী দার্শনিক হিসেবে স্পিনোজা, লাইবনিজ এবং কান্ট বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। সেখানে জ্ঞান উৎপত্তিতে-- ডেকার্ট এর অভিমতঃ            দার্শনিক ডেকার্ট এর মতে দর্শনচিন্তার প্রথম সূত্র হলো সংশয় বা সন্দেহ। আর এই সংশয় নিয়েই দর্শন আলোচনা শুরু হয় এবং সুশৃংখল সংশয়-পদ্ধতির মাধ্যমে সংসায়াতীত, স্বতঃপ্রমাণিত ও সার্বিক মূল সত্যে পৌঁছানো যাবে। এই মূল সত্য থেকে গাণিতিক অবরোহ পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে এবং তা অবশ্যই নির্মূল ও নির্ভরযোগ্য হবে। আর গণিতের অভ্রান্ততা এবং নিশ্চয়তাকে

ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা

 ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা করো। ব্যাপ্তি:- ন্যায় দর্শনমতে ব্যাপ্তি জ্ঞান হলো অনুমিতির অপরিহার্য শর্ত। ব্যাপ্তিজ্ঞান ব্যতীত অনুমিতির জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়। সুতরাং আমরা বলতে পারি, যেখানেই ধূম সেখানেই বহ্নি। এই সাহচর্য নিয়ম হলো ব্যাপ্তি।                 এখানে সাহচর্য কথাটির অর্থ হলো সমনাধিকরণ। অর্থাৎ যেখানে যেখানে ধূম থাকবে সেখানে সেখানে বহ্নি থাকবে। আর নিয়ম কথাটির অর্থ হলো নিয়ত বা ব্যতিক্রমহীনতা। সুতরাং সাহচর্য নিয়ম কথাটির মানে হল ব্যতিক্রমহীন সাহচর্য। আর সেখানে ধুম ও বহ্নির অর্থাৎ হেতু ও সাধ্যের সাহচর্য নিয়মই হল ব্যাপ্তি।    ব্যাপ্তি দুই প্রকার।         ১) সমব্যাপ্তি           ২) বিষমব্যাপ্তি। ১। সমব্যাপ্তিঃ               সমব্যাপক দুটি পদের ব্যাপ্তিকে সমব্যাপ্তি বলা হয়। এখানে ব্যাপক ও ব্যাপ্য-র বিস্তৃতি সমান হয়। যেমন, যার উৎপত্তি আছে, তার বিনাশ আছে। উৎপত্তি হওয়া বস্তু ও বিনাশ হওয়া বস্তুর বিস্তৃতি সমান। উৎপত্তিশীল ও বিনাশশীল সমব্যাপ্তি বিশিষ্ট। ২। বিষমব্যাপ্তি/অসমব্যাপ্তি :-             অসমব্যাপক দুটির প

তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস ছোট প্রশ্নোত্তর।

 ১) কুতুবউদ্দিন আইবক কে ছিলেন? উত্তর-কুতুবউদ্দিন আইবক গজনীর সুলতান মহম্মদ ঘুরির দাস ও সেনাপতি ছিলেন। তিনি দিল্লীর প্রথম তুর্কি সুলতান ছিলেন। তাঁর শাসনের শুরুর সাথে ভারতের এক নতুন যুগের সূচনা হয়। ২) নব্য মুসলমান কারা ছিলেন? কে তাদের দমন করেছিলেন? উত্তর - জালাল উদ্দিন ফিরোজ খিলজির আমলে হলান্ড বা আব্দুল্লা খানের নেতৃত্বে মোঘল আক্রমণ সংঘটিত হয় । তার আক্রমণ জালাল উদ্দিন কর্তৃক প্রতিহত হয় । সেই সময় কিছু বন্দি মঙ্গল জালাল উদ্দিনের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে । ধর্মান্তরিত হতে হবে এই শর্তে জালাল উদ্দিন তাদের আবেদনের সাড়া দেন। তারা এতে সম্মত হয় ।এই ধর্মান্তরিত মোঙ্গলেরা নব্য মুসলমান নামে পরিচিত। নব্য মুসলমানরা আলাউদ্দিনকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করলে সেই আলাউদ্দিন এর আদেশে একদিনে ৩০ হাজার নব্য মুসলমানকে হত্যা করে অর্থাৎ আলাউদ্দিন নব্য মুসলমানদের দমন করে। ৩) মালিক কাফুর দ্বারা বিজিত দাক্ষিণাত্যের দুটি রাজ্যের নাম করো। উত্তর - মালিক কাফুর ছিলেন সুলতান আলাউদ্দিনের একজন দক্ষ সেনাপতি । তাঁর দ্বারা দক্ষিণ ভারতের বিজিত রাজ্য দুটি হল দেবগিরি এবং বরঙ্গল। ৪) পাইবস ও সিজদা কি? উত্তর - পাইবস হল সম্রাটের প