Skip to main content

মূল্যায়ণ কাকে বলে? মূল্যায়ণের নীতিগুলি আলোচনা করো।

মূল্যায়ণ কাকে বলে? মূল্যায়ণের নীতিগুলি আলোচনা করো। 

ভূমিকাঃ-

         আধুনিক মনোবিজ্ঞান ও শিক্ষা ক্ষেত্রে মূল্যায়ণের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত কোন কিছুর উপর মূল্য আরোপ করার প্রক্রিয়াকে মূল্যায়ণ (Evaluation ) বলে। আসলে মূল্যায়ণ হলো ব্যক্তির আচরণের উপর মূল্য আরোপ করা। তবে বর্তমানে মনোবিজ্ঞান ও শিক্ষাক্ষেত্রে মূল্যায়ণ শব্দটিকে আরো ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করা হয়।আর সেখানে-

              আধুনিক মূল্যায়ণ হলো একটি উদ্দেশ্য ভিত্তিক বিজ্ঞানসম্মত ও সামঞ্জস্যপূর্ণ পরিমাপের প্রক্রিয়া। আর শিক্ষার দিক থেকে বলা হয় যে, শিক্ষার্থী শিক্ষার লক্ষ্য অর্জনের পথে কতটা অগ্রসর হয়েছে, তা নির্ধারণ করার প্রক্রিয়া হল মূল্যায়ণ। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ্ Wesley এর মতে-

       "মূল্যায়ন হলো যাবতীয় প্রচেষ্টা ও উপায় 

         যার সাহায্যে কাঙ্খিত উদ্দেশ্যগুলিকে 

         পরিমাণ ও গুণগতভাবে কতখানি 

       বাস্তবায়িত হয়েছে তা যাচাই করা যায়।"


মূল্যায়ণের নীতিসমূহঃ-

           মূল্যায়ণের জন্য যেসব নীতিগুলি প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত সেগুলিকে মূল্যায়ণের নীতি বলে। মূল্যায়ণ শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। শিক্ষা যেমন কতগুলি নীতি, পদ্ধতি, ধাপ ইত্যাদির ওপর দাঁড়িয়ে ঠিক তেমনি মূল্যায়ণের কয়েকটি নীতি রয়েছে। আর সেই নীতিগুলি হল---

১) আচরণ পরিবর্তনের নীতিঃ

          শিক্ষা একটি গতিশীল প্রক্রিয়া। শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শিক্ষণ ও শিখন। শিক্ষণ ও শিখন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর আচরণের পরিবর্তন ঘটে। যেমন পরীক্ষার্থীর মধ্যে বৌদ্ধিক অনুভূতি, দক্ষতা ইত্যাদির বিকাশ ঘটে। কী ধরনের আচরণের পরিবর্তন আমরা চাইছি বা কতটা সফল হয়েছে তা জানার জন্য প্রয়োজন মূল্যায়ণের।

২) উদ্দেশ্য নির্ধারণমূলক নীতিঃ 

         শিক্ষার দ্বারা শিক্ষার্থীর জ্ঞান, বোধ, প্রয়োগ দক্ষতা, আগ্রহ মনোভাব ইত্যাদি উদ্দেশ্য গুলির যথাযথ বিকাশ সম্ভব । এই বিকাশ কতটা হয়েছে তা নির্ধারণ করার জন্য প্রয়োজন মূল্যায়নের। তাই মূল্যায়ন করার আগে আমাদের জানা দরকার শিক্ষার্থীর কোন উদ্দেশ্যে মূল্যায়ণ করতে চাইছি।

৩) আচরণের জটিলতা নির্ধারক নীতিঃ 

             মানুষের বিভিন্ন ধরনের আচরণের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার ফলে মানুষের মনে জটিল আচরণের সৃষ্টি হয়। তাই এই আচরণের জটিলতা নির্ণয় করা যায় মূল্যায়ণের বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে।

৪) শিক্ষণ ও শিখন প্রক্রিয়ার নীতিঃ 

          শিক্ষার সাথে সম্পর্কিত শিক্ষণ ও শিখন প্রক্রিয়া। আর মূল্যায়ণের দ্বারা বোঝা যায় যে,শিক্ষণ প্রক্রিয়া কতটা সফল হয়েছে আবার শিক্ষার্থীর শিখন প্রক্রিয়ার কতটা উন্নতি হয়েছে। এক্ষেত্রে-

      যদি শিখন প্রক্রিয়ার যথাযথ উন্নয়ন না ঘটে তবে বুঝতে হবে শিক্ষণ প্রক্রিয়ার মধ্যে ত্রুটি রয়েছে বা যথাযথ শিক্ষণ কৌশল ব্যবহার করা হয়নি। অর্থাৎ--

              মূল্যায়ণের দ্বারা শিক্ষার্থীর প্রয়োজনমতো নির্দেশনা দেওয়া যায় বা শিক্ষকের শিক্ষণ পদ্ধতির উন্নয়ন করা সম্ভব হয়। অতএব আমরা বলতে পারি যে,উপরোক্ত চারটি নীতির উপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলে যথাযথ সুফল পাওয়া সম্ভব।


ঠিক এরূপভাবে বিষয় ভিত্তিক আলোচনা সাজেশন এবং অন্যান্য শিক্ষামূলক ভিডিও পেতে ভিজিট করুন আমাদের "SHESHER KOBITA SUNDORBON" YOUTUBE CHANNEL 



Comments

Popular posts from this blog

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর।

দর্শন প্রথম সেমিস্টার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাইনর সিলেবাস)  ১)চার্বাক মতে ভূত কয়টি ও কি কি? উত্তরঃচার্বাক মতে ভূত চারটি- ক্ষিতি, অপ্ , তেজ ও মরুৎ ২) স্বভাববাদ কী? উত্তরঃ চার্বাক জড়বাদের ভিত্তি হল স্বভাববাদ। যে মতবাদ অনুসারে স্বভাব থেকেই ভূত সৃষ্টি, আবার স্বভাব থেকেই বিচ্ছেদ। যার জন্য ঈশ্বরকে স্বীকার করা প্রয়োজন নেই। ৩) অব্যাপ্যদেশ কথাটির অর্থ লেখো। উত্তরঃ অব্যাপ্যদেশ বলতে বোঝায়- অশাব্দ অর্থাৎ যাকে শব্দের দ্বারা প্রকাশ করা যায় না। ৫) জ্ঞান লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে?  কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে তার নিজের বিষয়ীভূত গুণ ছাড়াও যদি অপর একটি ইন্দ্রিয়ের বিষয়ীভূত গুণকে প্রত্যক্ষ করার হয়, তাহলে সেই প্রত্যক্ষকে জ্ঞানলক্ষণ প্রত্যক্ষ বলা হয়। ৬) ন্যায় মতে প্রমাণের প্রকার  উত্তরঃ ন্যায় মতে প্রমাণ চার প্রকার। প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শাব্দ। ৭) সন্নিকর্ষ কাকে বলে? উত্তরঃ ন্যায় মতে ইন্দ্রিয় ও কোন বাস্তব পদার্থের মধ্যে একপ্রকার বিশেষ সম্পর্ক ঘটলে তবেই আমাদের একটি বস্তুর প্রত্যক্ষজ্ঞান ।আর ঐ বিশেষ বিশেষ সম্পর্কের পারিভাষিক নাম হলো সন...

ব্রিটিশ(3rd.Sem) পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয় সেমিস্টার রাষ্ট্রবিজ্ঞান মাইনর সিলেবাস)। ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত বলে বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিল, শাসনতান্ত্রিক রীতিনীতি, পার্লামেন্ট প্রণীত আইন প্রভৃতির মাধ্যমে পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব অর্জিত হয়েছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্ট আইনানুগ সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছে, রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব নয়। আর সেখানে আইনানুগ সার্বভৌমত্ব বলা হয়, কারণ-       যেকোনো বিষয়ে পার্লামেন্ট আইন প্রণনয়নের অধিকারী। এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র হওয়ায় পার্লামেন্টে কোন আইন প্রণয়নের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় না। কমন্সসভা তথা নিম্নকক্ষের সার্বভৌমত্বকেই বলা হয় পার্লামেন্টের সার্বভৌমত্ব।     ••ব্রিটিশ পার্লামেন্টকে সার্বভৌমত্ব বলার কারণ- ১) পার্লামেন্টের ওপর আইনগত কোনরূপ বাধানিষেধ আরোপ করা যায় না। ২) পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের বৈধতার ব্যাপারে আদালত কোন প্রশ্ন তুলতে পারেনা। ব্রিটেনের আদালত পার্লামেন্ট প্রণীত আইনের ওপর বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার দ্বারা সীমিত করতে পারে না। ৩) ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ক্ষমতার উপর শাসনবিভাগ অনুরূপ ন...

ইতিহাস (3rd Semester) সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

 তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস মাইনর)। ১)বন্দেগান-ই-চাহালগানি বলতে কী বোঝায়? •উত্তরঃবন্দেগান-ই-চাহালগান বলতে চল্লিশ জন তুর্কি ও অ-তুর্কি দাসদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বাহিনীকে বোঝায়। এই বাহিনীকে ডাল চালিশা বা তুরকান-ই- চাহালগানি নামে ডাকা হতো। ২)আমির খসরু কে ছিলেন? •উত্তরঃ আমির খসরু ছিলেন প্রখ্যাত সুফি সাধক বা আরেফ নিজামউদ্দিন আওলিয়ার ছাত্র এবং অন্যতম প্রধান খলিফা। যাঁকে 'ভারতের তোতা' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ৩) মহরানা প্রতাপ কে ছিলেন?  •উত্তরঃ মেবারের শিশোদিয়া রাজবংশের একজন হিন্দু রাজপুত রাজা ছিলেন মহারানা প্রতাপ সিং। যিনি রাজপুতদের বীরত্ব ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক। বহু বছর ধরে তিনি মুঘল সম্রাট আকবরের সঙ্গে লড়াই করেন। ৪) জায়গীরদারী সংকট কী? •উত্তরঃ জায়গিরদারী সংকট ছিল মোগল সাম্রাজ্যের একটি অর্থনৈতিক সংকট। এই সংকটে জমি বা জায়গিরের অভাব দেখা দিয়েছিল। যার ফলে প্রশাসনিক খরচ মেটানো এবং যুদ্ধের খরচ বহন করা সম্ভব হতো না। ৫) দাক্ষিণাত্য ক্ষত কী? •উত্তরঃ দাক্ষিণাত্য ক্ষত বলতে ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীত...