Skip to main content

বিস্মৃতি/বিস্মরণ অভিশাপ না আশীর্বাদ? যুক্তি দাও।

 বিস্মৃতি/বিস্মরণ অভিশাপ না আশীর্বাদ? আলোচনা করো।(পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, দ্বিতীয় সেমিস্টার, এডুকেশন,মাইনর)


             আমরা জানি স্মৃতির বিপরীত প্রক্রিয়া হল বিস্মতি। আবার ভুলে যাওয়াকে আমরা বলি বিস্মৃতি। আসলে বিস্মৃতি হলো মস্তিষ্কে সংরক্ষণের অভাব, এটি একটি স্বাভাবিক মানসিক ঘটনা। 

         মনোবিদ রিবোর্ট বলেন যে, আমাদের কোন কিছু শেখার জন্য ভুলে যাওয়ার প্রয়োজন আছে। আমরা যা শিখি তার সমস্তটাই মনের মধ্যে রাখা সম্ভব নয়। কারণ আমাদের মানসিক ক্ষমতা হলো সীমাবদ্ধ। অপরিচিত জিনিসকে যদি আমরা ভুলে না যাই তাহলে আমরা প্রয়োজনীয় জিনিস মনে রাখতে পারব না। অনেক অনেক অতৃপ্ত বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা আমরা ভুলতে চাই মানসিক কষ্ট লাঘব করার জন্য। এদিক থেকে বিচার করলে বিস্মৃতি আমাদের কাছে আশীর্বাদ স্বরূপ। আবার-

            অনেক সময় আমরা প্রয়োজনীয় জিনিসও ভুলে যাই। সবকিছু ভুলে যাওয়া এবং প্রয়োজনীয় কিছু যথাসময়ে মনে করতে না পারাকে নিঃসন্দেহে অভিশাপ বলা যায়।মনোবিদ ফ্রয়েডের মতে-

         " আমরা ভুলে যেতে চাই বলে ভুলে যাই। 

            ভুলে যাওয়াটা হলো একটি ঐচ্ছিক

             মানসিক প্রক্রিয়া।" 

আসলে আমরা বিস্মৃতির বিষয়টিকে সচেতন মন থেকে সরিয়ে অসচেতন মনে অবদমন করি। আমরা যা পছন্দ করি এবং যা ভালবাসি তাই মনে রাখি। আর যা পছন্দ করি না তা ভুলে যাই। যেমন-

         আমরা আনন্দের কথা মনে রাখি কিন্তু দুঃখ বা বেদনার কথা ভুলে যেতে চাই।

             পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, আমাদের জীবনে এমন অনেক অভিজ্ঞতা আছে যেগুলিকে বিস্মৃত না করলে আমাদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠত। বিস্মৃতি মানুষের জীবনকে সুস্থ ও স্বাভাবিক করে তুলতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। তবে অনেক সময় আমরা প্রয়োজনীয় ও আবশ্যক জিনিসও ভুলে যাই। সুতরাং বিস্মৃতিএক থেকে আশীর্বাদ তেমনি অন্যদিকে অভিশাপও।


Comments

Popular posts from this blog

জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course)

 জ্ঞানের উৎস সম্পর্কে বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ(Rationalism)আলোচনা করো। (For BA. Second Semester & Higher Secondary Course) ভুমিকাঃ আমরা জানি জ্ঞানের উৎপত্তি বা উৎস নিয়ে পাশ্চাত্য দর্শনে দুটি উল্লেখযোগ্য পরস্পর বিরোধী মতবাদ দেখা যায়। আর এই দুটি পরস্পর বিরোধী মতবাদের মধ্যে একটি অন্যতম মতবাদ হলো বুদ্ধিবাদ বা প্রজ্ঞাবাদ। আর সেই বুদ্ধিবাদ অনুসারে-        আমরা জানি পাশ্চাত্য দর্শনের ইতিহাসে বুদ্ধিবাদের প্রধান প্রবক্তা হলেন দার্শনিক ডেকার্ট। আর এই দার্শনিক ডেকার্টকে আধুনিক পাশ্চাত্য দর্শনের জনক বলা হয়। তবে তার পরবর্তী বুদ্ধিবাদী দার্শনিক হিসেবে স্পিনোজা, লাইবনিজ এবং কান্ট বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। সেখানে জ্ঞান উৎপত্তিতে-- ডেকার্ট এর অভিমতঃ            দার্শনিক ডেকার্ট এর মতে দর্শনচিন্তার প্রথম সূত্র হলো সংশয় বা সন্দেহ। আর এই সংশয় নিয়েই দর্শন আলোচনা শুরু হয় এবং সুশৃংখল সংশয়-পদ্ধতির মাধ্যমে সংসায়াতীত, স্বতঃপ্রমাণিত ও সার্বিক মূল সত্যে পৌঁছানো যাবে। এই মূল সত্য থেকে গাণিতিক অবরোহ পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে এবং তা অবশ্যই নির্মূল ও নির্ভরযোগ্য হবে। আর গণিতের অভ্রান্ততা এবং নিশ্চয়তাকে

ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা

 ব্যাপ্তি কাকে বলে? ব্যাপ্তি কয় প্রকার ও কি কি? ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভের উপায়/ব্যাপ্তিগ্রহের উপায় গুলি আলোচনা করো। ব্যাপ্তি:- ন্যায় দর্শনমতে ব্যাপ্তি জ্ঞান হলো অনুমিতির অপরিহার্য শর্ত। ব্যাপ্তিজ্ঞান ব্যতীত অনুমিতির জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়। সুতরাং আমরা বলতে পারি, যেখানেই ধূম সেখানেই বহ্নি। এই সাহচর্য নিয়ম হলো ব্যাপ্তি।                 এখানে সাহচর্য কথাটির অর্থ হলো সমনাধিকরণ। অর্থাৎ যেখানে যেখানে ধূম থাকবে সেখানে সেখানে বহ্নি থাকবে। আর নিয়ম কথাটির অর্থ হলো নিয়ত বা ব্যতিক্রমহীনতা। সুতরাং সাহচর্য নিয়ম কথাটির মানে হল ব্যতিক্রমহীন সাহচর্য। আর সেখানে ধুম ও বহ্নির অর্থাৎ হেতু ও সাধ্যের সাহচর্য নিয়মই হল ব্যাপ্তি।    ব্যাপ্তি দুই প্রকার।         ১) সমব্যাপ্তি           ২) বিষমব্যাপ্তি। ১। সমব্যাপ্তিঃ               সমব্যাপক দুটি পদের ব্যাপ্তিকে সমব্যাপ্তি বলা হয়। এখানে ব্যাপক ও ব্যাপ্য-র বিস্তৃতি সমান হয়। যেমন, যার উৎপত্তি আছে, তার বিনাশ আছে। উৎপত্তি হওয়া বস্তু ও বিনাশ হওয়া বস্তুর বিস্তৃতি সমান। উৎপত্তিশীল ও বিনাশশীল সমব্যাপ্তি বিশিষ্ট। ২। বিষমব্যাপ্তি/অসমব্যাপ্তি :-             অসমব্যাপক দুটির প

তৃতীয় সেমিস্টার ইতিহাস ছোট প্রশ্নোত্তর।

 ১) কুতুবউদ্দিন আইবক কে ছিলেন? উত্তর-কুতুবউদ্দিন আইবক গজনীর সুলতান মহম্মদ ঘুরির দাস ও সেনাপতি ছিলেন। তিনি দিল্লীর প্রথম তুর্কি সুলতান ছিলেন। তাঁর শাসনের শুরুর সাথে ভারতের এক নতুন যুগের সূচনা হয়। ২) নব্য মুসলমান কারা ছিলেন? কে তাদের দমন করেছিলেন? উত্তর - জালাল উদ্দিন ফিরোজ খিলজির আমলে হলান্ড বা আব্দুল্লা খানের নেতৃত্বে মোঘল আক্রমণ সংঘটিত হয় । তার আক্রমণ জালাল উদ্দিন কর্তৃক প্রতিহত হয় । সেই সময় কিছু বন্দি মঙ্গল জালাল উদ্দিনের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে । ধর্মান্তরিত হতে হবে এই শর্তে জালাল উদ্দিন তাদের আবেদনের সাড়া দেন। তারা এতে সম্মত হয় ।এই ধর্মান্তরিত মোঙ্গলেরা নব্য মুসলমান নামে পরিচিত। নব্য মুসলমানরা আলাউদ্দিনকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করলে সেই আলাউদ্দিন এর আদেশে একদিনে ৩০ হাজার নব্য মুসলমানকে হত্যা করে অর্থাৎ আলাউদ্দিন নব্য মুসলমানদের দমন করে। ৩) মালিক কাফুর দ্বারা বিজিত দাক্ষিণাত্যের দুটি রাজ্যের নাম করো। উত্তর - মালিক কাফুর ছিলেন সুলতান আলাউদ্দিনের একজন দক্ষ সেনাপতি । তাঁর দ্বারা দক্ষিণ ভারতের বিজিত রাজ্য দুটি হল দেবগিরি এবং বরঙ্গল। ৪) পাইবস ও সিজদা কি? উত্তর - পাইবস হল সম্রাটের প